প্রকাশিত: Sat, May 27, 2023 4:21 PM
আপডেট: Sat, Jun 28, 2025 5:24 PM

ভিআইপি নিরাপত্তায় আর পুলিশ নয় আসছে আনসার গার্ড ব্যাটালিয়ন

আনিস তপন: আগামীতে ভিআইপিদের নিরাপত্তায় পুলিশ সদস্যদের পরিবর্তে আনসার ব্যাটেলিয়ন সদস্যদের মোতায়েন করবে সরকার। এ লক্ষ্যে আনসার বাহিনীর এই অংশকে বিশেষায়িত ইউনিট হিসেবে গড়ে তুলতে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

মন্ত্রী বলেন, এই বাহিনীকে শুধু ভিআইপি প্রটেকশনের জন্যই বিশেষভাবে তৈরী করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ সব ভিআইপিদের নিরাপত্তায় আনসার সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। 

ভিআইপিদের নিরাপত্তায় বর্তমানে যেসব স্থানে বা যেভাবে পুলিশ সদস্যরা নিয়োজিত আছে আনসার সদস্যরাও সেভাবেই তাদের নিরাপত্তা দেবে।

আনসার ব্যাটেলিয়ন সদস্যদের গার্ড রেজিমেন্টের আদলে গড়ে তোলা হচ্ছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ও দক্ষ সৈনিকের মত গড়ে তোলা হচ্ছে। ফলে আনসার বাহিনীর এই ইউনিটটি হবে ওয়েল ইকুইপ্ট, ওয়েল ট্রেইণ্ড এবং ওয়েল ডিসিপ্লিন্ড। প্রত্যেক সদস্যের নিম্নতম উচ্চতা হবে অন্তত ছয় ফুট। 

মন্ত্রী জানান, ব্যাটেলিয়ন আনসার সদস্যদের অস্ত্রেও আসবে ব্যাপক পরিবর্তন। তাদের সাধারণ অস্ত্রের পরিবর্তে দেয়া হয়েছে চাইনিজ এসএমজি (সাব মেশিন গান)। তবে ভিআইপিদের নিরাপত্তায় চলাচলের সময় গাড়ীর আগে-পিছে মোতায়েন করা সদস্যদের হাতে থাকবে আধুনিক শটগান। থাকবে পুলিশের মত আধুনিক ওয়াকিটকি সেট। 

প্রতিটি দলের কমাণ্ডে থাকবেন একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা। ফলে ভিআইপি মুভমেন্ট বা নিরাপত্তা দেওয়ার সময় প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত বা করণীয় সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট দলই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। দলের কমাণ্ডে পুলিশ কর্মকর্তা থাকায় কর্তব্য পালনে আইনী জটিলতা হবে না। 

সম্প্রতি ৪ দেশের রাষ্ট্রদূতের এসকর্ট প্রত্যাহার সম্পর্কে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, গুলশানে হলি আর্টিজান রেষ্টুরেন্টে জঙ্গি হামলা ও বিএনপি’র অগ্নি-সন্ত্রাসের মত বিপদজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় ৪ দেশের রাষ্ট্রদূতদের এসকর্ট সুবিধা দেয়া হয়েছিল। কারণ জঙ্গি হামলা ও অগ্নি-সন্ত্রাসের কারণে দেশে স্বাভাবিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার ফলে এই রাষ্ট্রদূতরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে মৌখিকভাবে আমাদের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছিল। 

সেই প্রেক্ষিতেই তাদের রাস্তায় চলাচলের সময় নিরাপত্তা সুবিধা দিতে এসকর্ট দল মোতায়েন করা হয়েছিল। পাশাপাশি তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় গানম্যান নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। এখন দেশে জঙ্গি তৎপরতা নেই, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অগ্নি-সন্ত্রাসের মত পরিস্থিতিও নেই। একারণে তাদের দেয়া এসকর্ট সুবিধা প্রত্যাহার করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এসকর্ট সুবিধা প্রত্যাহার করা হলেও সব দূতাবাস, রাষ্ট্রদূত ও তাদের কর্মকর্তাদের আবাসস্থলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহাল রয়েছে। পুরো ডিপ্লোমেটিক জোনের নিরাপত্তায় এখনো ৮০০ সদস্যের অধিক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

তিনি বলেন,  সামনে নির্বাচন। এসময় সারাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করতে হবে। সব দিক বিবেচনায় আগে থেকেই আনসার বাহিনীর ব্যাটেলিয়ন ইউনিটকে ভিআইপি প্রটেকশনের জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরী করা হচ্ছে। এজন্য সরকার দূতাবাসগুলোকে প্রস্তাব দিয়েছে, এসকর্ট বা রাস্তায় চলাফেরায় নিরাপত্তা দরকার হলে সরকারকে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ পরিশোধ করে আনসার সদস্যদের এসকর্ট সুবিধা নেওয়া যাবে।  

সম্প্রতি পুলিশের এসকর্ট সুবিধা বহাল রাখাতে মার্কিন দূতাবাসের অনুরোধ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানানো হয়েছে। এটা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব